চলার পথে ওদের ভাঙাচোরা ছোটোছোটো ঝুপড়িগুলো চোখে পড়লেও গ্রাহ্য করি না। ওদের চেহারাগুলো দেখে নাকে রুমাল দিয়ে পাশ কাটিয়ে দ্রুত চলে যাই।
এটাই আমাদের সমাজ। বর্তমানে এভাবেই আমরা নিজেদেরকে গড়ে নিয়েছি। কিন্তু ওদের সংখ্যাও তো কম নয়। সারা দেশ জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ এভাবেই অনাহারে অর্ধাহারে রোদ বৃষ্টি ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে ঝুপড়িতে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে। ওদের উন্নতির জন্য কতটুকু আমরা চেষ্টা করেছি তা জানি না, কিন্তু নিজেদের সুবিধার্থে, নিজেদের আখেড় গোছাতে ওই সব নীরিহ না-খেতে-পরতে-পাওয়া মানুষগুলোকে আমরা ব্যবহার করে চলেছি। আর এ কাজ আজকের নয়, এ কাজ মানব সমাজের সূচনা পর্ব থেকেই। বর্তমানের আকাশ ছোঁওয়া উন্নত সভ্যতার যুগেও একই ধারায় বয়ে চলেছে।
আমার উপন্যাস ‘শয়তানের চোখে জল’ সেইরকমই কিছু মানুষকে নিয়ে লেখা। যে মানুষগুলো সমাজের মূল স্রোত থেকে হারিয়ে গিয়ে কোনও এক আলটপকা খড়কুটো অবলম্বন করে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে। তাদের মধ্যে থেকেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কোনও এক শক্তপোক্ত তরুণ। অদম্য সাহস, বুদ্ধি আর পেশির জোরে নিজেকে দলপতি হিসেবে গড়ে তুলছে। তারপর তাদেরই নিয়ে অন্ধকার সমাজে মিশে গিয়ে নিজের প্রাপ্য ছিনিয়ে নিয়ে সুখে থাকার চেষ্টা করে চলেছে।